দক্ষিণ এশীয় সভ্যতা
প্রাচীনকালে ভারতীয় উপমহাদেশের অংশ ছিল আমাদের আজকের এই স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ । এই উপমহাদেশের ইতিহাস অনেক প্রাচীন । অনুমান করা হয় আজ থেকে প্রায় সওর হাজার বছর আগে এ অঞ্চলে মানুষ বসতি স্থাপন করেছিল । তারা পাহাড়ের গুহায় বসবাস করত । প্রাচীনকাল থেকেই আমাদের ভূমি খুব উর্বর । বনে-জঙ্গলে জন্মাত নানা ফলের গাছ । সে সময় মানুষ ফলমূল সংগ্রহ করে তাদের ক্ষুধা নিবারন করত । তারা কিন্তু সব ফল খেত না । তারা শিখেছিল কোন ফল খাওয়া যায় আর কোন ফল খাওয়া যায় না । তখন বসতি স্থাপন করা সহজ কোনো ব্যাপার ছিল না । বসতি স্থাপনের জন্য তাদের গুহা খুঁজে বের করতে হতো । কখনো কখনো তারা উঁচু ঢালে গুহা খনন করত । যথাযথভাবে গুহা খনন করা না হলে মাটি ধসে ক্ষতি, এমনকি মারা যেতো ।তাই গুহা খনন করাটা ছিল একটা বিশেষ দক্ষতা । কায়িকশ্রম ও মেধাশ্রমের যৌথ প্রয়োগে প্রাচীন মানুষ এ দক্ষতা অর্জন করেছিল । এছাড়া সে যুগের মানুষকে পানির কথাও ভাবতে হতো । পানি ছাড়া জীবন চলে না । তাই প্রাচীন সভ্যতা সাধারণত নদীর ধারে গড়ে উঠেছিল । এছাড়া নদীর দু'পাশের জমি বেশ উর্বর হওয়ায় সেখানে ফলের গাছ খুব ভালো জন্মাত । এ ধরনের জায়গায় বসতি স্থাপন ছিল খুব সুবিধাজনক । বসতি স্থাপনের জন্য এমন জায়গা তাদের নির্বাচন করতে হতো যা প্রাকৃতিক বিপদমুক্ত । আশেপাশে শিকার করার মতো প্রাণী ও ফলমূল ইত্যাদি সহজে পাওয়ার সুবিধা থাকার পাশাপাশি থাকতে হবে পানি । বুদ্ধি খাটিয়ে মানুষ এসব বুঝতে পেরেছিল । তাই বলা যায় বসতি স্থাপনের জন্য জায়গা নির্বাচন করা মেধাশ্রমের উদাহরণ । আবার জায়গা নির্বাচনের পর সেখানে বসতবাড়ি গড়ে তুলতে মানুষকে অনেক কায়িকশ্রম করতে হতো ।
উপরের চিএে একজন মানুষ তার থাকার জায়গায় তথা বাসস্থানের কথা চিন্তা করছে ; চিন্তা করছে সে অনুযায়ী বাড়ি বানানোর । এর পাশাপাশি চিন্তা করছে বাড়িটি বানাতে কী কী উপাদান লাগবে । তার পর সে চিন্তা করে বের করবে এসব উপাদান কোথায় পাবে, কিভাবে সংগ্রহ করবে । এ সকল ভাবনা-চিন্তার কাজই হলো মেধাশ্রম । আবার বাড়ি বানানোর উপাদানগুলো সংগ্রহ করতে এবং বাড়ি বানাতে তাকে কায়িকশ্রম করতে হবে । এ থেকে আমরা বুঝতে পারি, এখন নয় বরং সেই প্রাচীনকাল থেকেই মানুষের দৈনন্দিন জীবনে কায়িকশ্রম ও মেধাশ্রম উভয়ই ছিল ।